Search This Blog

Theme images by MichaelJay. Powered by Blogger.

Blog Archive

Thursday, December 8, 2016

ঈদজ্জোহার তকবির শোন ঈদগাহে

ঈদজ্জোহা


(প্রথমে দূরাগত আজানের ধবনি–Fade in আজান Fade out–)


  


(গান)


ঈদজ্জোহার তকবিরতকবির : আল্লার মাহাত্ম্য ঘোষণা। শোন ঈদগাহেঈদগাহ : ঈদের নামাজ পড়ার ময়দান।


(তার) কোরবানির সামান নিয়ে চল রাহে।।


কোরবানির রঙে রঙিন পর লেবাসলেবাস : দামি পোশাক।


পিরাহানেপিরাহান : ঢিলা কুর্তা। মাখ রে ত্যাগের গুল-সুবাস


দে মোবারকবাদ দীনের বাদশাহে।।


খোদারে দে প্রাণের প্রিয়, শোন এ ঈদের মাজেরামাজেরা : মহিমা, বিভূতি।,


যেমন পুত্রে বিলিয়ে দিলেন খোদার নামে হাজেরা,


ওরে কৃপণ দিসনে ফাঁকি আল্লাহে।।


তোর পাশের ঘরে গরিব কাঙাল কাঁদছে যে


তুই তারে ফেলে ইদগাহে যাস সং সেজে,


তাই চাঁদ উঠল এল না ঈদ


   নাই হিম্মত নাই উম্মিদ


শোন কেঁদে কেঁদে বেহেশ্‌ত হতে


   হজরত আজ কী চাহে।।


  


আজ ইদজ্জোহা – বকরীদ। আজ পরম ত্যাগের পরম উৎসব। হজরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হিস্ সালামের আবির্ভাবের সহস্রাধিক বৎসর পূর্বে হজরত ইব্রাহিম আলায়হিস্‌ সালাম নবুয়তনবুয়ত : নবির দায়িত্ব। পান – অর্থাৎ আল্লাহ কতৃর্ক নবিরূপে প্রেরিত হন। আল্লাহের নামের তিনি তাঁর অন্তরের বাইরের সব-কিছু সমর্থন করেন বলে তাঁকে খলিলুল্লাহ বা আল্লার বন্ধু–সখা বলা হয়। তাঁকে এই পরম গৌরবে গৌরবান্বিত করা হয় দেখে বেহেশ্‌তের ফেরেশতারা আল্লাহ কে নিবেদন করেন – ‘হে পরম প্রভু, ইব্রাহিম এমন কী পুণ্য অর্জন করেছেন যে, তোমার সখা বলে তিনি অভিনন্দিত হলেন?’ ‘আল্লাহ বললেন – তার আমার উপরে কী নির্ভরতা, কত পরম ত্যাগী সে তোমরা দেখো। এই বলে ইব্রাহিমকে স্বপ্নে বললেন, ‘ইব্রাহিম আল্লাহের নামে কোরবানি দাও!’ হজরত ইব্রাহিম তার পরদিবস তাঁর উটগুলি কোরবানি দিয়ে গরিব দুঃখীদের বিলিয়ে দিলেন। আল্লাহ আবার স্বপ্নে বললেন, ‘ইব্রাহিম উৎসর্গ করো!’ ইব্রাহিম আবার উট কোরবানি দিলেন। আল্লাহ্ আবার স্বপ্নে ইব্রাহিমকে বললেন ‘ইব্রাহিম! তোমার সবচেয়ে প্রিয় যে তাকে আল্লার নামে কোরবানি দাও!’ ইব্রাহিম বুঝলেন – তাঁর একমাত্র পুত্রই এই দুনিয়ায় তাঁর সবচেয়ে প্রিয়। ইসমাইল তখন তাঁর মাতা হাজেরার সাথে বর্তমান কাবার কাছে প্রায় বনবাসীর জীবনযাপন করছেন।


ইব্রহিম গিয়ে তাঁর পুত্রকে আল্লাহের আদেশ শোনাতেই ইসমাইল আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে বললেন, ‘আল্লাহকে অশেষ ধন্যবাদ আমার পরম সৌভাগ্য যে, আল্লাহ তাঁর এই বান্দাকে তাঁর পবিত্র নামে কোরবান হওয়ার জন্য কবুল করেছেন’। ইসমাইলের মাতা বিবি হাজেরাও অশ্রু-সজল নেত্রে আল্লাহ্‌কে ধন্যবাদ দিয়ে বললেন, ‘আমিও সত্যই পরম সৌভাগ্যবতী, নইলে আল্লাহ্ তাঁর এই বাঁদির পুত্রকে কেন তাঁর নামে উৎসর্গ করার জন্য মঞ্জুর করলেন?’ মা কাঁদতে কাঁদতে পুত্রকে তার পিতার হাতে দিলেন। ইব্রাহিম ইসমাইলকে আল্লার রাহে কোরবানি দেওয়ার জন্য পর্বত শিখরে উঠে তাঁর হাত পা বেঁধে বিসমিল্লাহ্ বলে কণ্ঠদেশে ছুরি চালালেন। আল্লার আরশ কুরসি লওহ কলম কেঁপে উঠল। ফেরেশতা হুরপরি সোলেমান মারহাবা-মারহাবামারহাবা-মারহাবা : ধন্য, ধন্য। করে কেঁদে উঠল – সাত আশমান টলতে লাগল। সূর্য মেঘের নেকাবেনেকাব : চাদর। মুখ ঢাকল। মহামৌনী মহাধ্যানী ইসরাফিলের ধ্যান ভেঙে গেল। ইব্রাহিম ছুরি যত চালান ইসমাইলের কণ্ঠের একটি লোপকূপও ভেদ করতে পারেন না। তখন ইসমাইল তাঁর পিতাকে বললেন, ‘পিতঃ বোধ হয় স্নেহবশত আপনার হাত দুর্বল হয়ে পড়েছে, তাই হাত চলছে না। আপনি কাপড় দিয়ে আপনার চোখ বন্ধ করে ছুরি চালান’। ইব্রাহিম পুত্রের কথায় আনন্দিত হয়ে নিজের চোখ বেঁধে ছুরি চালালেন। এইবার ছুরি কণ্ঠ ভেদ করল। আল্লাহ্‌কে ধন্যবাদ দিয়ে চোখের কাপড় খুলে ইব্রাহিম দেখলেন – যাকে কোরবানি করেছেন – যার কণ্ঠ ভেদ করে তাঁর ছুরি চলেছে – সে ইসমাইল নয় – সে একটি দুম্বা মেষ। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে হাসছেন বন্ধন মুক্ত ইসমাইল ও হজরত জিবরাইল। আল্লার বাণী-বাহক ফেরেশতা হজরত জিবরাইল বললেন– ‘আল্লাহ্ তোমার কোরবানি কবুল করেছেন –‘ওই দেখো সাত আকাশ জুড়ে সমস্ত ফেরেশতা হুরপরি তোমায় মোবারকবাদ দিচ্ছেন। আজ থেকে তোমার পুত্রের নাম হল ইসমাইল জবিহুল্লাহ্–!’ এমনই বকরীদের চাঁদে এমনই দিনে হজরত ইব্রাহিম তাঁর প্রিয়তম পুত্রকে আল্লার নামে উৎসর্গ করেছিলেন। আজ এই বকরীদে কে আছে মুসলমান – যে মুসলমান মানে আল্লার নামে যিনি তাঁর সর্বস্ব সমর্পণ করেছেন – উৎসর্গ করেছেন – কোথা সেই আত্মত্যাগী মুসলমান যিনি তাঁর সবকিছু রাহে ফিল্লাহ্ বিলিয়ে দিয়ে আল্লার প্রিয় হয়েছেন? ঘরে ঘরে আজ গরিব কাঙাল নিরন্ন বস্ত্রহীন আশ্রয়হারা। তাদেরই পাশে আমার দালান বাড়ি, খেত খামার শস্যে ফসলে পূর্ণ, উদৃবৃত্ত অর্থে আমার বাক্স প্যাঁটরা পূর্ণ! জেওরেজেওর : অলংকারে। লেবাসে আমার পুত্র কন্যার অঙ্গ ঝলমল করছে – আর পাশের বাড়িতে কাঙালিনি মেয়ে কাঁদছে –

No comments:
Write comments

Interested for our works and services?
Get more of our update !