শিশু জাদুকর
পার হয়ে কত নদী কত সে সাগর
এই পারে এলি তুই শিশু জাদুকর!
কোন রূপ-লোকে ছিলি রূপকথা তুই,
রূপ ধরে এলি এই মমতার ভুঁই।
নবনীত সুকোমল লাবণি লয়ে
এলি কে রে অবনিতে দিগ্বিজয়ে।
কত সে তিমির-নদী পারায়ে এলি —
নির্মল নভে তুই চাঁদ পহেলি।
আমরার প্রজাপতি অন্যমনে
উড়ে এলি দূর কান্তার-কাননে।
পাখা-ভরা মাথা তোর ফুল-ধরা ফাঁদ,
ঠোঁটে আলো চোখে কালো – কলঙ্কী চাঁদ!
কালো দিয়ে করি তোর আলো উজ্জ্বল —
কপালেতে টিপ দিয়ে নয়নে কাজল।
তারা-জুঁই এই ভুঁই আসিলি যবে
একটি তারা কি কম পড়িল নভে?
বনে কি পড়িল কম একটি কুসুম?
ধরণির কোলে এলি একরাশ চুম।
স্বরগের সবকিছু চুরি করে চোর,
পলাইয়া এলি এই পৃথিবীর ক্রোড়!
নিয়ে এলি হুরিদের তুলতুলে গাল,
পরিদের রাঙা ঠোঁট টুকটুকে লাল,
কিন্নরী-কণ্ঠ ও ‘নাগিসি’ চোখ,
চিবুকের টোল ভরে সুধা অমিয়া,
মন্মথ-ফুলধনু ভুরুতে নিয়া
চোখে ফিরদৌসের ‘লাল ইয়াকুত’! —
তোরে, চোর, খুঁজে ফেরে আশমানি দূত!
তোরে হেরি বেহেশত কাঁদে ইউসুফ,
তোর হাসি শুনে বনে বুলবুলি চুপ।
ছোটো তোর মুঠি ভরি আনিলি মণি—
সোনার জিয়ন-কাঠি মায়ার ননী।
তোর সাথে ঘর ভরে এল ফাল্গুন,
সব হেসে খুন হল, কী জানিস গুণ!
এল কুসুমের বাস পাখিদের গান,
ভিড় করে আলো এল, বুক ভরে প্রাণ।
পেলি হেথা ঠোঁট-ভরা মধু চুম্বন,
আমি দিনু হাতে তোর নামের কাঁকন।
তোর নামে রহিল রে মোর স্মৃতিটুক,
তোর মাঝে রহিলাম আমি জাগরূক।
No comments:
Write comments