প্রস্তাবনা
[অন্ধকার নিশীথিনী। আলেয়ার আলো মাঝে মাঝে জ্বলিয়া উঠিয়া আবার নিভিয়া যাইতেছে। দিশেহারা পথিক তাহারই পিছনে ছুটিয়া পথ হারাইতেছে। ...
আলেয়ার নৃত্য ও তাহারই অনুসরণ করিয়া চলিতে দিশেহারা পথিকের গীত।]
[গান]
পথিক
নিশি নিশি মোরে ডাকে সে স্বপনে।
নিরাশার আলো জ্বালিয়া গোপনে।।
জানি না মায়াবিনী কী মায়া জানে,
কেবলই বাহিরে পরান টানে,
ঘুরে ঘুরে মরি আঁধার গহনে।।
শত
পথিকে ও রূপে ছল হানে,
অপরূপা শত রূপে শত গানে।
পথে পথে বাজে তাহারই বাঁশি,
সে সুরে নিখিল-মন উদাসী,
দহে জাদুকরী বিধুর দহনে।।
[গান শেষ করিয়া পথিকের প্রস্থান]
[গান ও নৃত্য করিতে করিতে দুইটি প্রজাপতির প্রবেশ]
[গান]
প্রজাপতিদ্বয় :
দুলে আলো শতদল ঝলমল ঝলমল
চল লো মেলি পাখা রঙিন লঘু চপল।।
যদি অনল-শিখায় এ পাখা পুড়িয়া যায়
ক্ষতি কী – ভালোবাসায় জ্বলিতে আসা কেবল।।
কাঁটার কাননে ফুল তুলিতে বেঁধে আঙুল,
মধুর এ পথভুল – ফুলঝরা বনতল।।
চলিতে ফুল দলি, চাহে যে তারে ছলি
সেই সে পথে চলি, যে পথে আলেয়া ছল।।
[গীত-শেষে প্রজাপতি দুইটি আলেয়ার নিকট যাইতেছে আলেয়া নিভিয়া গেল। আলেয়া নিভিয়া যাওযার সাথে সাথে কয়েকটি রক্ত-বাস পুষ্পতনু কিশোরী আসিয়া দাঁড়াইল। প্রজাপতি দুইটি তাহাদের দেখিয়া তাহাদের দিকে উড়িয়া গেল। প্রজাপতি ও সেই কিশোরীদের গান।]
[গান]
কিশোরীরা :
মোরা ফুটিয়াছি বঁধু
হেরি তোমারই আশায়।
প্রথম কিশোরী :
আমি অনুরাগ-রাঙা
আমি গোলাব-শাখায়।।
দ্বিতীয় কিশোরী :
বন-কুন্তলে গরবি
আমি কানন-করবী।
তৃতীয় কিশোরী :
আমি সরসী-কমলা
আমি ষোড়শী কমলা
আমি চম্পক খোঁপায়।।
প্রজাপতিদ্বয় :
নিভিল আলেয়া-আলো পথ চলিতে,
তোমরা আসিলে কি গো মন ছলিতে।
কিশোরীরা :
মোরা অনির্বাণ-শিখা দীপ্তিমতী,
আমরা কুসুম রাঙা আমরা জ্যোতি।
প্রজাপতিদ্বয় :
মোরা চাহি নাকো প্রেম, চাহি
মোহিনী মায়ায়।।
[গীত-শেষে প্রজাপতি দুইটি ও কিশোরীগণ অন্ধকারের যবনিকা ঠেলিয়া উষার দীপ্তি দেখাইয়া অন্যপথে চলিয়া গেল।]
No comments:
Write comments