আলেয়া
তিনটি পুরুষ
মীনকেতু – রূপ-সুন্দর।
চন্দ্রকেতু – মহিমা-সুন্দর, ত্যাগ-সুন্দর।
উগ্রাদিত্য – শক্তি-মাতাল।
তিনটি নারী
কৃষ্ণা – চিরকালের ব্যর্থ-প্রেম নারী, জীবনে সে কাউকে ভালোবাসতে পারলে না – এই তার জীবনের চরম দুঃখ।
জয়ন্তী – যে-তেজে যে-শক্তিতে নারী রানি হয়, নারীর সেই তেজ সেই শক্তি।
চন্দ্রিকা – চিরকালের কুসুম-পেলব প্রাণ-চঞ্চল নারী, যে শুধু পৌরুষ-কঠোর পুরুষকে ভালোবাসতে চায়! মরুভূমির পরে যে বনশ্রী, সংগ্রামের শেষে যে কল্যাণ, এ তাই। এরই তপস্যায় পশু-নর মানুষ হয়, মৃত্যু-পথের পথিক প্রাণ পায়। ...
নারীর হৃদয় – তাদের ভালোবাসা কুহেলিকাময়। এও এক আলেয়া। এ যে কখন কাকে পথ ভোলায়, কখন কাকে চায়, তা চির-রহস্যের তিমিরে আচ্ছন্ন।
যাকে সে চিরকাল অবহেলা করে এসেছে, – তাকেই সে ফিরে পেতে চায় তার চলে যাওয়ার পরে। যাকে সে চিরকাল চেয়েছে – সেই তখন তার চলে-যাওয়া প্রতিদ্বন্দ্বীর পিছনে পড়ে যায়।
পুরুষও তেমনই হৃদয় হতে হৃদয়ান্তরে তার মানসীকে খুঁজে ফেরে। তাই তার কাছে আজকার সুন্দর, কাল হয়ে ওঠে বাসি। হৃদয়ের এই তীর্থ-পথে তার যাত্রার আর শেষ নেই। তাই সে এক মন্দিরে পূজা নিবেদন করে আর মন্দিরের বেদিতলে গিয়ে লুটিয়ে পড়ে।
হৃদয়ের এই রহস্যই মানুষকে করেছে চির-রহস্যময়, পৃথিবীকে করেছে বিচিত্রসুন্দর। ‘আলেয়া’ তারই ইঙ্গিত।
No comments:
Write comments