Search This Blog

Theme images by MichaelJay. Powered by Blogger.

Blog Archive

Sunday, November 13, 2016

আট বছর আগের একদিন

শোনা গেল লাশকাটা ঘরে

নিয়ে গেছে তারে;

কাল রাতে - ফাল্গুনের রাতের আধাঁরে

যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ

মরিবার হল তার সাধ। বধূ শুয়ে ছিল পাশে - শিশুটিও ছিল;

প্রেম ছিল,আশা ছিল-জোৎসনায়,-তবে সে দেখিল

কোন ভূত? ঘুম কেন ভেঙে গেলো তার?

অথবা হয়নি ঘুম বহুকাল - লাশকাটা ঘরে শুয়ে ঘুমায় এবার।

এই ঘুম চেয়েছিলো বুঝি!

রক্তফেনা-মাখা মুখে মড়কের ইদুঁরের মত ঘাড় গুজি

আধার ঘুজির বুকে ঘুমায় এবার;

কোনোদিন জাগিবেনা আর।

কোনোদিন জাগিবেনা আর।

জাগিবার গাঢ় বেদনার

অবিরাম - অবিরাম ভার

সহিবেনা আর -

এই কথা বলেছিলো তারে

চাঁদডুবে চ’লে গেলে - অদ্ভুদ আঁধারে

যেন তার জানালার ধারে

উটের গ্রীবার মতো কোন এক নিস্তব্ধতা এসে।

তবুও তো পেঁচা জাগে;

গলিত স্থবির ব্যাঙ আরো দুই মুহূর্তের ভিক্ষা মাগে।

আরেকটি প্রভাতের ইশারায় - অনুমেয় উষ্ণ অনুরাগে

টের পাই যুথচারী আঁধারের গাঢ় নিরুদ্দেশে

চারদিকে মশারির ক্ষমাহীন বিরুদ্ধতা

মশা তার অন্ধকার সংগ্রামে জেগে থেকে জীবনের স্রোত ভালোবাসে

রক্ত ক্লেদ বসা থেকে রোদ্রে ফের উড়ে যায় মাছি;

সোনালি রোদের ঢেউয়ে উড়ন্ত কীটের খেলা কতো দেখিয়াছি।

ঘনিষ্ঠ আকাশ যেন - যেন কোন বির্কীন জীবন

অধিকার ক’রে আছে ইহাদের মন;

চাঁদ ডুবে গেলে পর প্রধান আঁধারে তুমি অশ্বথের কাছে

একগাছা দড়ি হাতে গিয়েছিলে তবু একা - একা,

যে জীবন ফড়িঙের,দোয়েলের-মানুষের সাথে তার হয়নাকো দেখা

এই জেনে।

অশ্বথের শাখা

করেনি কি প্রতিবাদ ? জোনাকির ভিড় এসে

সোনালী ফুলের স্নিগ্ধ ঝাঁকে

করেনি কি মাখামাখি?

থুরথুরে অন্ধ পেঁচা এসে

বলেনি কি; ‘বুড়ি চাঁদ গেছে বুঝি বেনোজলে ভেসে

চমৎকার !

ধরা যাক দু-একটা ইঁদুর এবার!’

জানায়নি পেঁচা এসে এ-তুমুল গাড় সমাচার ?

জীবনের এই স্বাদ-সুপক্ক যবের ঘ্রান হেমন্তের বিকেলের-

তোমার অসহ্য বোধ হ’লো;

মর্গে কি হৃদয় জুড়ালো

মর্গে - গুমোটে-

থ্যাঁতা ইঁদুরের মতো রক্তমাখা ঠোঁটে।

শোনো

তবু এ মৃতের গল্প; কোনো

নারীর প্রণয়ে ব্যর্থ হয় নাই;

বিবাহিত জীবনের সাধ

কোথাও রাখেনি কোন খাদ,

সময়ের উদ্বর্তনে উঠে এসে বধু

মধু-আর মননের মধু

দিয়েছে জানিতে;

হাড়হাবাতের গ্লানি বেদনার শীতে

এ-জীবন কোনদিন কেঁপে ওঠে নাই;

তাই

লাশকাটা ঘরে

চিৎ হয়ে শুয়ে আছে টেবিলের পরে।

জানি - তবু জানি

নারীর হৃদয়-প্রেম-শিশু-গৃহ-নয় সবখানি;

অর্থ নয়, কীর্তি নয়, সচ্ছলতা নয় -

আর এক বিপন্ন বিষ্ময়

আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে

খেলা করে;

আমাদের ক্লান্ত করে,

ক্লান্ত - ক্লান্ত করে;

লাশকাটা ঘরে

সেই ক্লান্তি নাই;

তাই

লাশকাটা ঘরে

চিৎ হয়ে শুয়ে আছে টেবিলের পরে।

তবু রোজ রাতে আমি চেয়ে দেখি,আহা,

থুরথুরে অন্ধ পেঁচা অশ্বত্থের ডালে বসে এসে,

চোখ পাল্টায়ে কয়: ‘বুড়ি চাঁদ গেছে বুঝি বেনোজলে ভেসে ?’

চমৎকার !

ধরা যাক দু-একটা ইঁদুর এবার-

হে প্রগাঢ় পিতামহী,আজো চমৎকার ?

আমিও তোমার মতো বুড়ো হবো-বুড়ি চাঁদটারে আমি

ক’রে দিবো কালীদহে বেনোজলে পার;

আমরা দুজনে মিলে শূন্য ক’রে চ’লে যাবো জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার।

No comments:
Write comments

Interested for our works and services?
Get more of our update !