Search This Blog

Theme images by MichaelJay. Powered by Blogger.

Blog Archive

Saturday, November 26, 2016

বেদুইন

ধবল কঙ্কাল যেথা দিকে-দিকে রয়েছে ছড়ায়ে
অন্তহীন বালুক জড়ায়ে
দিবানিশি জ্বলিতেছে লক্ষ চুল্লিশিখা
পথে-পথে দৈন্য যেথা, গ্লানি বিভীষিকা,
নিঃসহায় প্ৰাণ,
মরুভূ-ঝটিকা গর্জে দিকে-দিকে ক্ষিপ্ত, বহির্মান!
কোটি-কোটি বিষতীব্র ভুজঙ্গম ফণার ঘূর্ণনে
মরীচিকা জাগে ক্ষণে-ক্ষণে—
মোহের মাধুরী মাখা মৃত্যুর পাথার!
– শ্যামা বসুন্ধরা ত্যজি সেই পথে তুমি কোন যাও বার-বার
ওগো বেদুইন!
— মোদের নগর পল্লী- আমাদের সুসজ্জিত, শান্ত রাত্ৰি দিন
ঝলমল প্রাসাদ বিপণি,
লীলাকক্ষ, নৃত্যগীত, প্রমোদের ধ্বনি
বিভ্ৰম, বিলাস
মনোহরা এ-ধরণী—পুষ্পকূঞ্জ, জোৎস্নানিশি, সুরভিত এই মধুমাস
এ-বিচিত্র গৃহাঙ্গন, এই অন্তঃপুর,
শান্ত সুমধুর
প্রেয়সীর হাসি-অশ্রু-মাখা;
—যৌবনের এ জয়পতাকা,
মোদের এ বর্ষ, ঋতু, ঊষা, বিভাবরী
তোমাদের করে না মুগ্ধ— কোন্ দূর দিগন্তের দীর্ঘ পথ ধরি,
ধু-ধু-ধু-ধু বালুকার বিজন সংকটে,
চক্রবালতটে
উঠিতেছো আষ্ফালিয়া তুমি!
—তোমার চরণতলে নাচিতেছে যোজনান্ত তপ্ত মরুভূমি
উন্মাদ, উত্তাল।
বালুকার পারাবার, আকাশের আরক্ত মশাল
বক্ষে তব আসিতেছে ছুটে!
শোন তীক্ষ্ন তীব্র রক্ত তোমার ও আঁখির সম্পুটে
পলে-পলে ঘুরে যায় ধূম্রাকাশ গিরি, বালিয়াড়ি।
তন্দ্রাহারা যাত্রী ওগো— শ্রান্তিহীন মরুপথচারী,
হারায়েছো দিশা
অনন্ত নৃত্যের লোভে, অফুরন্ত উল্লাসের তৃষা
চিত্তে তব নিরন্তর উঠেতেছে দহি,
হে দূর-বিরহী!
—মৌন গৃহতলে বসি নিরালা— একাকী
শতাব্দীর সভ্যতার পিঞ্জরের পাখি
আছি মোরা আর্ত ম্লান আঁখি দুটি ভুলে!
—সীমাহারা নীলিমার কূলে
যেতে চাই ছুটে,
অসংখ্য শৃঙ্খলাঘাতে বিদ্রোহীর বক্ষে শুধু রক্ত ওঠে ফুটে!
ভাঙে না এ-প্রাচীরের কারা,
জেগে আছে চিরন্তন ব্যর্থ বিধিবিধানের এই মিথ্যা বিরাট পাহারা!
মনে মোর ঘুরে মরে লক্ষ্যহারা, বাধাবন্ধনহীন
মরুভূর কোন্ বেদুইন।

No comments:
Write comments

Interested for our works and services?
Get more of our update !