Search This Blog

Theme images by MichaelJay. Powered by Blogger.

Blog Archive

Sunday, November 27, 2016

মনবিহঙ্গম

রীফ–সর্দার


তোমারে আমরা ভুলেছি আজ,


    হে নবযুগের নেপোলিয়ন,


কোন সাগরের কোন সে পার


    নিবু-নিবু আজ তব জীবন।


  


তোমার পরশে হল মলিন


    কোন সে দ্বীপের দীপালি-রাত,


বন্দিছে পদ সিন্ধুজল,


    ঊর্ধ্বে শ্বসিছে ঝঞ্ঝাবাত।


  


তব অপমানে, বন্দি-রাজ,


    লজ্জিত সারা নর-সমাজ,


কৃতঘ্নতা ও অবিশ্বাস


    আজি বীরত্বে হানিছে লাজ।


  


মোরা জানি আর জানি জগৎ


    শত্রু তোমারে করেনি জয়,


পাপ অন্যায় কপট ছল


    হইয়াছে জয়ী, শত্রু নয়!


  


সম্মুখে রাখি মায়া-মৃগ


    পশ্চাৎ হতে হানে শায়ক –


বীর নহে তারা ঘৃণ্য ব্যাধ


    বর্বর তারা নর-ঘাতক।


  


হে মরু-কেশরী আফ্রিকার!


    কেশরীর সাথে হয়নি রণ,


তোমারে বন্দি করেছে আজ


    সভ্য ব্যাধের ফাঁদ গোপন।


কামানের চাকা যথা অচল


    রৌপ্যের চাকি ঢালে সেথায়,


এরাই য়ুরোপি বীরের জাত


    শুনে লজ্জাও লজ্জা পায়!


  


তুমি দেখাইলে, আজও ধরায়


    শুধু খ্রিস্টের রাসভ নাই,


আজও আসে হেথা বীর মানব,


    ইবনেইবনে : সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা। - করিমকরিম : দয়াবান, দাতা। কামালকামাল : তুর্কি জাতির জনক। -ভাই।


  


আজও আসে হেথা ইবনে-সৌদ,


    আমানুল্লাহ্আমানুল্লাহ্ : কুসংস্কারের পট-ভূমিকায় সুশিক্ষিত বাদশা। , পহ্‌লবীপহ্‌লবী : পারস্য দেশীয়। ,


আজও আসে হেথা আলতরাশআলতরাশ : মনীষী, কবি। ,


    আসে সনৌসীসনৌসী : মধ্যযুগের সুবিখ্যাত মুসলিম মনীষী। – লাখ রবি।


  


তুমি দেখাইলে, পাহাড়ি গাঁয়


    থাকে নাকো শুধু পাহাড়ি মেষ,


পাহাড়েও হাসে তরুলতা


    পাহাড়ের মতো অটল দেশ।


  


থাকে নাকো সেথা শুধু পাথর,


    সেথা থাকে বীর-শ্রেষ্ঠ নর,


সেথা বন্দরে বানিয়া নাই


    সেথা বন্দরে নাই বাঁদর!


  


শির-দার তুমি ছিলে রীফের,


    পরনিকো শিরে শরিফি তাজ,


মামুলি সেনার সাথে সমান


    করেছ সেনানী, কুচকাওয়াজ!


শুধু বীর নহ, তুমি মানুষ,


    শাহি তখ্‌ত্ ছিল গিরি-পাষাণ,


রণভূমে ছিলে রণোন্মাদ,


    দেশে ছিলে দোস্ত্ মেহেরবান।


  


রীফেতে যেদিন সভ্য ভূত


    নাচিতে লাগিল তাথই থই,


আশমান হতে রীফ-বাসীর


    শিরে ছড়াইল আগুন-খই,


  


কচি বাচ্চারে নারীদেরে


    মারিল বক্ষে বিঁধে সঙিন,


যুদ্ধে আহত বন্দিরে


    খুন করে যার হাত রঙিন,


  


হয়েছে বন্দি তাহারা যখন –


    (ওদের ভাষায় – হে ‘বর্বর’।)


করিয়াছ ক্ষমা তাহাদেরে,


    তাহাদের করে রেখেছ কর।


  


ওগো বীর! বীর বন্দিদের,


    করনিকো তুমি অসম্মান,


তাদের নারী ও শিশুদেরে


    দিয়েছ ফিরায়ে – হয়নি প্রাণ।


  


তুমি সভ্যতা-গর্বীদের


    মিটাওনি শুধু যুদ্ধ-সাধ,


তাদেরে শিখালে মানবতা,


    বীরও সে মানুষ, নহে নিষাদ।


বীরেরে আমরা করি সালাম,


    শ্রদ্ধায় চুমি দস্ত্দস্ত্ : হাত। দারাজদারাজ : প্রশস্ত, উদার।,


তোমারে স্মরিয়া কেন যেন


    কেবলই অশ্রু ঝরিছে আজ।


  


তব পতনের কথা করুণ


    পড়িতেছে মনে একে একে,


তব মহত্ত্ব তুমি নিজে


    মানুষের বুকে গেলে লেখে।


  


মাসতুতো ভাই চোরে চোরে –


    ফ্রান্স স্পেন করি আঁতাত


হয়ে লাঞ্ছিত বারংবার


    হায়ওয়ানহায়ওয়ান : পশু। সাথে মিলাল হাত।


  


শয়তানি ছল ফেরেব-বাজফেরেব-বাজ : ধাপ্পাবাজ।


    ভুলাল দেশদ্রোহীর মন,


অর্থ তাদের করিল জয়


    অস্ত্রে যাহারা জিনিল রণ।


  


স্বদেশবাসীরে কহো ডাকে


    অশ্রু-সিক্ত নয়নে, হায় –


‘ভাঙে নাই বাহু, ভেঙেছে মন,


    বিদায় বন্ধু, চির-বিদায়!’


  


বলিলে, ‘স্বদেশ! রীফ-শরিফ!’


    পরানের চেয়ে প্রিয় আমার!


তুমি চেয়েছিলে মা আমায়,


    সন্তান তব চাহে না আর!


‘মাগো তোরে আমি ভালোবাসি,


    ভালোবাসি মা তারও চেয়ে –


মোর চেয়ে প্রিয় রীফ-বাসীরীফ-বাসী : আফ্রিকার পার্বত্য দেশের অধিবাসী।


    তোর এ পাহাড়ি ছেলেমেয়ে!


  


‘মাগো আজ তারা বোঝে যদি,


    করিতেছি ক্ষতি আমি তাদের,


আমি চলিলাম, দেখিস তুই,


    তারা যেন হয় আজাদআজাদ : স্বাধীন। ফের!’


  


দেশবাসী-তরে, মহাপ্রেমিক,


    আপনারে বলি দেলে তুমি,


ধন্য হইল বেড়ি-শিকল


    তোমার দস্ত্-পদদস্ত্-পদ : হাত-পা। চুমি!


  


আজিকে তোমায় বুকে ধরি


    ধন্য হইল সাগর-দ্বীপ,


ধন্য হইল কারা-প্রাচীর,


    ধন্য হইনু বদ-নসিব।


  


কাঠ-মোল্লার মউলবির


    যুজদানে ইসলাম কয়েদ,


আজও ইসলাম আছে বেঁচে


    তোমাদেরই বরে, মোজাদ্দেদমোজাদ্দেদ : কুসংস্কারে পরিপূর্ণ ধর্মকে অভিনব জীবনরসে উদ্দীপনাদানকারী মহাপুরুষ।!


  


বদ-কিসমত শুধু রীফের


    নহে বীর, ইসলাম-জাহান


তোমারে স্মরিয়া কাঁদিছে আজ,


    নিখিল গাহিছে তোমার গান।


হে শাহানশাহ্ বন্দিদের!


    লাঞ্ছিত যুগে যুগাবতার!


তোমার পুণ্যে তীর্থ আজ


    হল গো কারার অন্ধকার!


  


তোমার পুণ্যে ধন্য আজ


    মরু-আফ্রিকা মূর-আরব,


ধন্য হইল মুসলমান,


    অধীন বিশ্ব করে স্তব।


  


জানি না আজিকে কোথা তুমি


    নয়ি দুনিয়ার মুসা তারিকতারিক : সুবিখ্যাত মুসলিম সেনাপতি। !


আছে ‘দীন’, নাই সিপা-সালারসিপা-সালার : সৈন্যাধ্যক্ষ। ,


    আছে শাহি তখ্‌ত্, নাই মালিক।


  


মোরা যে ভুলেছি, ভুলিয়ো বীর,


    নাই স্মরণের সে অধিকার,


কাঁদিছে কাফেলাকাফেলা : তীর্থযাত্রীর দল। কারবালায়,


    কে গাহিবে গান বন্দনার!


  


আজিকে জীবন-‘ফোরাত’ফোরাত : ইরাকের নদী যার তীরে কারবালার মাঠে ইমাম হোসেন সপরিবারে শহিদ হন। -তীর


    এজিদের সেনা ঘিরিয়া ওই,


শিরে দুর্দিন-রবি প্রখর,


    পদতলে বালু ফোটায় খই।


  


জয়নালসম মোরা সবাই


    শুইয়া বিমারি খিমারখিমার : শিবির, তাঁবু। মাঝ,


আপশোশ করি কাঁদি শুধু,


    দুশমন করে লুটতরাজ!


আব্বাস-সম তুমি হে বীর


    গেন্ডুয়া খেলি অরি-শিরে


পঁহুছিলে একা ফোরাত-তীর,


    ভরিলে মশকমশক : জল বহনের জন্য চামড়া নির্মিত থলে।
প্রাণ-নীরে।


  


তুমি এলে, সাথে এল না দস্ত্,


    করিল শত্রু বাজু শহিদ,


তব হাত হতে আব-হায়াতআব-হায়াত : মৃত-সঞ্জীবনী সুধা।


    লুটে নিল ইউরোপ-এজিদ।


  


কাঁদিতেছি মোরা তাই শুধুই


    দুর্ভাগ্যের তীরে বসি,


আকাশে মোদের ওঠে কেবল


    মোহররমের লাল শশী!


  


এরই মাঝে কভু হেরি স্বপন –


    ওই বুঝি আসে খুশির ঈদ,


শহিদ হতে তো পারি না কেউ –


    দেখি কে কোথায় হল শহিদ।


  


ক্ষমিয়ো বন্ধু, তব জাতের


    অক্ষমতার এ অপরাধ,


তোমারে দেখিয়া হাঁকি সালাতসালাত : নামাজ।
,


    ওগো মগ্‌রেবীমগ্‌রেবী : সান্ধ্য নামাজ।
ঈদের চাঁদ!


  


এ গ্লানি লজ্জা পরাজয়ের


    নহে বীর, নহে তব তরে!


তিলে তিলে মরে ভীরু য়ুরোপ


    তব সাথে তব কারা-ঘরে।


  


বন্দি আজিকে নহ তুমি,


    বন্দি – দেশের অবিশ্বাস!


আসিছে ভাঙিয়া কারা-দুয়ার


    সর্বগ্রাসীর সর্বনাশ!


আব্বাস-সম তুমি হে বীর


    গেন্ডুয়া খেলি অরি-শিরে


পঁহুছিলে একা ফোরাত-তীর,


    ভরিলে মশকমশক : জল বহনের জন্য চামড়া নির্মিত থলে।
প্রাণ-নীরে।


  


তুমি এলে, সাথে এল না দস্ত্,


    করিল শত্রু বাজু শহিদ,


তব হাত হতে আব-হায়াতআব-হায়াত : মৃত-সঞ্জীবনী সুধা।


    লুটে নিল ইউরোপ-এজিদ।


  


কাঁদিতেছি মোরা তাই শুধুই


    দুর্ভাগ্যের তীরে বসি,


আকাশে মোদের ওঠে কেবল


    মোহররমের লাল শশী!


  


এরই মাঝে কভু হেরি স্বপন –


    ওই বুঝি আসে খুশির ঈদ,


শহিদ হতে তো পারি না কেউ –


    দেখি কে কোথায় হল শহিদ।


  


ক্ষমিয়ো বন্ধু, তব জাতের


    অক্ষমতার এ অপরাধ,


তোমারে দেখিয়া হাঁকি সালাতসালাত : নামাজ।
,


    ওগো মগ্‌রেবীমগ্‌রেবী : সান্ধ্য নামাজ।
ঈদের চাঁদ!


  


এ গ্লানি লজ্জা পরাজয়ের


    নহে বীর, নহে তব তরে!


তিলে তিলে মরে ভীরু য়ুরোপ


    তব সাথে তব কারা-ঘরে।


  


বন্দি আজিকে নহ তুমি,


    বন্দি – দেশের অবিশ্বাস!


আসিছে ভাঙিয়া কারা-দুয়ার


    সর্বগ্রাসীর সর্বনাশ!


আব্বাস-সম তুমি হে বীর


    গেন্ডুয়া খেলি অরি-শিরে


পঁহুছিলে একা ফোরাত-তীর,


    ভরিলে মশকমশক : জল বহনের জন্য চামড়া নির্মিত থলে।
প্রাণ-নীরে।


  


তুমি এলে, সাথে এল না দস্ত্,


    করিল শত্রু বাজু শহিদ,


তব হাত হতে আব-হায়াতআব-হায়াত : মৃত-সঞ্জীবনী সুধা।


    লুটে নিল ইউরোপ-এজিদ।


  


কাঁদিতেছি মোরা তাই শুধুই


    দুর্ভাগ্যের তীরে বসি,


আকাশে মোদের ওঠে কেবল


    মোহররমের লাল শশী!


  


এরই মাঝে কভু হেরি স্বপন –


    ওই বুঝি আসে খুশির ঈদ,


শহিদ হতে তো পারি না কেউ –


    দেখি কে কোথায় হল শহিদ।


  


ক্ষমিয়ো বন্ধু, তব জাতের


    অক্ষমতার এ অপরাধ,


তোমারে দেখিয়া হাঁকি সালাতসালাত : নামাজ।
,


    ওগো মগ্‌রেবীমগ্‌রেবী : সান্ধ্য নামাজ।
ঈদের চাঁদ!


  


এ গ্লানি লজ্জা পরাজয়ের


    নহে বীর, নহে তব তরে!


তিলে তিলে মরে ভীরু য়ুরোপ


    তব সাথে তব কারা-ঘরে।


  


বন্দি আজিকে নহ তুমি,


    বন্দি – দেশের অবিশ্বাস!


আসিছে ভাঙিয়া কারা-দুয়ার


    সর্বগ্রাসীর সর্বনাশ!

No comments:
Write comments

Interested for our works and services?
Get more of our update !